শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৩০ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
নির্মিতব্য দোকান ঘর ভাঙচুর, মিথ্যা ও হয়রানি মূলক মামলার প্রতিবাদে ফ্যাসিস্ট হেডমাস্টার জামাল হোসেন এর পদত্যাগের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন বাংলাদেশ মাদরাসা জেনারেল টিচার্স এসোসিয়েশন (বিএমজিটিএ) এর চট্টগ্রাম জেলার দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে আইনজীবী হত্যার প্রতিবাদে নিউ মার্কেট মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি, ইসকন নিষিদ্ধসহ ৩ দাবি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমলনগরে বিএমজিটিএ’র তৃতীয় উপজেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত কুয়াইশ বুড়িশ্চর শেখ মোহাম্মদ সিটি কর্পোরেশন কলেজে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান কর্মসূচী পালিত আগামী এক মাসের মধ্যে সংশোধিত মাদরাসা এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামো পাসের আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন বিএমজিটি এর মহাসচিব বিএমজিটি এর মহাসচিবের অভিনন্দন জ্ঞাপন মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ও শিক্ষা উপদেষ্টার সাথে মতবিনিময় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এর কর্মী সম্মেলনে ২০২৪ অনুষ্ঠিত

নির্বাচনের নামে ভেল্কিবাজি

হাসানুজ্জামান বাবু
  • Update Time : শুক্রবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ১২৫ Time View

নির্বাচনের নামে ভেল্কিবাজি

দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের একান্ত প্র‍য়োজন। কিন্ত বর্তমান সরকার সেই নির্বাচন দিতে ব্যর্থ হয়েছে। তারা নির্বাচনের নামে দেশের মানুষের সাথে প্রতারণা করেছে। বিরোধীদলের প্রধান নেত্রী, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া কারাগারে। তার ছেলে তথা দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতা তারেক রহমান যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত। গ্রেফতারি এড়াতে তিনি লন্ডনে থাকেন দেশে ফেরেন না। একারণে দশম জাতীয় নির্বাচন বয়কট করেছিল বিএনপি-সহ বিরোধী দলগুলি। ফলে সংসদ একেবারে বিরোধীদল শূন্য। এরপরের জাতীয় নিবার্চনে এক মামলায় বিরোধী দলপ্রধানকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বর্তমান সরকারের অধিনেই প্রহসনমূলক নির্বাচন দেওয়া হয়। সরকারী দলের তান্ডবে রাজপথেও সেভাবে গত পাঁচ বছরে কোনও কার্যকরী আন্দোলন করতে পারেননি বিরোধীরা। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিজয় প্রায় নিশ্চিতই ছিল। কিন্তু যে অস্বাভাবিক মার্জিনে জয়লাভ করে শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন মহাজোট তৃতীয়বারের জন্য সরকার গঠন করেছে তা কার্যত বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকেই বড়সড় প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে। কোন মতেই এধরণের নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পেতে পারেনা।
জনসংখ্যার নিরিখে বিশ্বে অষ্টম স্থানে থাকা বাংলাদেশের ইতিহাসে অবশ্য নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ নতুন নয়। কিন্তু এই পর্যায়ে অনিয়ম এর আগে কখনও হয়নি বলেই দাবি করছেন বিরোধীরা। আর্ন্তজাতিক মহলের একাংশ সেই দাবির সঙ্গে সহমত। সংবাদমাধ্যম, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকের আশঙ্কা, গণতান্ত্রিক পদ্ধতির প্রতি এই নির্বাচনের ফলাফল যে বিপুল সংশয়ের জন্ম দিয়েছে তা আগামী কয়েক বছরে বাংলাদেশের রাজনীতিতে সংসদ বর্হিভূত নানা অনভিপ্রেত বাঁকবদলের সম্ভাবনাকে উস্কে দিতে পারে।
প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার মাত্র দু’বছর পর ১৯৭৩ সালের নির্বাচনকে কেন্দ্র করেও বড় মাত্রায় অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল। ওই নির্বাচনের পর থেকেই দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি দ্রুত পরিবর্তিত হতে থাকে। ১৯৭৫ সালে খুন হন শেখ মুজিবুর রহমান। তারপর অল্প সময়ের মধ্যে একাধিকবার ক্ষমতার হাতবদল, অভ্যুত্থানের প্রচেষ্টা, সেনার শাসন, এরশাদের স্বৈরাচার দেখেছে বাংলাদেশ। এরই ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগকে ১৯৭৫ সালের পর দীর্ঘ ২১ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকতে হয়েছে।
এবার আসা যাক, নির্বাচনের নামে যে ভেল্কিবাজি বা প্রহসন দেখেছে এদেশের জনগন সে প্রসঙ্গে। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে মোট আসনসংখ্যার প্রায় ৯৬ শতাংশ আসন দখল করেছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় মহাজোট। তাদের প্রাপ্ত আসন সংখ্যা ২৮৮। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ জয়ী হয়েছে ২৫৫টি আসনে, এরশাদের জাতীয় পার্টি পেয়েছে ২২টি আসন। আর বিরোধীদের প্রাপ্ত আসনের সংখ্যা মাত্র সাত! বিএনপি পাঁচটি এবং তাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের শরিক, শেখ মুজিবুর রহমানের মন্ত্রীসভার আইনমন্ত্রী ও বাংলাদেশের সংবিধানের রূপকার ডক্টর কামাল হোসেনের দল গণফোরাম পেয়েছে দু’টি আসন।
নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, প্রায় শতাধিক কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা এমন অস্বাভাবিক ব্যবধানেই জয়ী হয়েছেন। মোট ভোটের ৯০ শতাংশের বেশি তাদের ঝুলিতে গিয়েছে। খুলনার একটি কেন্দ্রে দেখা গিয়েছে, মোট ভোটারসংখ্যার চেয়ে প্রায় সাড়ে ২২ হাজার বেশি ভোট পড়েছে!
এবারের নির্বাচনের প্রাক্কালে বিরোধীরা বারবার দলীয় সরকারের পরিবর্তে নিরপেক্ষ, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু তা মানা হয়নি।তাদের অভিযোগ, অধিকাংশ আসনে আগের রাতেই ভোটকেন্দ্র দখল করে নিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। রাতেই নৌকা প্রতীকে ছাপ মেরে এক তৃতীয়াংশ ব্যালট বাক্সে ভরে ফেলা হয়। সকাল সাতটা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ওই কেন্দ্রগুলিতে ছ’টা থেকেই বুথ দখল হয়ে যায়। জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট এবং কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বাধীন গণতান্ত্রিক বাম জোটের অভিযোগ, অধিকাংশ কেন্দ্রেই তাদের এজেন্টদের বসতে দেওয়া হয়নি।
বহু জায়গায় প্রার্থী নিজেও ভোট দিতে পারেন নি। চট্টগ্রামে বাম জোটের গণসংহতি আন্দোলনের একজন প্রার্থী নিজের ভোটটিও পাননি! তার প্রাপ্ত ভোট শূন্য! একই অভিযোগ সর্বত্র আওয়ামী লীগের কর্মীদের সামনে ব্যালটে ছাপ দিতে বাধ্য হয়েছেন ভোটারেরা। বিরোধী ভোটারদের বুথকেন্দ্রের বাইরে থেকেই ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বারবার বিরোধী দলের আহবান সত্ত্বেও আওয়ামী লীগ নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করেনি এবং এতে তারা রাজনৈতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হল। কেননা দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সংকটে পড়লে তা শাসকদলের জন্যই সবচেয়ে বিপজ্জনক। মানুষের পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা ক্যু বা অভ্যুত্থানের দিকে যেতে পারে। এদেশে আগেও এমন হয়েছে। মানুষের ধৈর্যের বাধ ভেঙে তা মোকাবিলা করার ক্ষমতা সরকারের থাকবে না।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102